প্রায় ২৪ বছর ফাঁসির সেলে (কনডেম সেল) থাকা শরীফা বেগম ও সামাদের মৃত্যুদণ্ড রহিত করে আমৃত্যু কারাদণ্ডের রায় দিয়েছেন আদালত। এর পাশাপাশি ফাঁসির সেল থেকে সাধারণ সেলে নেওয়ার নির্দেশও দেওয়া হয়েছে।
আজ বৃহস্পতিবার (১ আগস্ট) প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসানের নেতৃত্বে গঠিত আপিল বিভাগ এই রায় দেন। আদালতে আসামি পক্ষের আইনজীবী ছিলেন মোহাম্মদ শিশির মনির।
কারা কর্মকর্তাদের তথ্য অনুযায়ী, গত মাসের প্রথম দিকে হত্যা মামলায় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি শরীফাকে নিয়ে একাধিক সংবাদমাধ্যমে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। পরে প্রতিবেদনটি প্রধান বিচারপতির নজরে আসে। আপিল মামলাটি শুনানির উদ্যোগ নিয়েছেন তিনি। এর ধারাবাহিকতায় দীর্ঘদিন পর গত ৯ জুলাই এ আপিল মামলাটি (৯৬/২০১৭) শুনানির জন্য কার্যতালিকায় আসে।
সংবাদ মাধ্যমের প্রতিবেদনে বলা হয়, তিন মাস বয়সী মেয়ে সূচী আক্তারকে রেখে ২৬ বছর আগে হত্যা মামলায় শরীফা বেগম কারাগারে যান। ৫৫ বছরের জীবনের প্রায় ২৪ বছরই ‘মৃত্যু সেলে’ থাকা শরীফার মামলার বিচারই এখনো শেষ হয়নি। শরীফার মতো জামালপুরের আবদুস সামাদ আজাদ ওরফে সামাদও একই মামলায় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত হয়ে গত ২৪ বছর ধরে ফাঁসির সেলে বন্দি।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, রাজধানীর শাহজাহানপুর এলাকার একটি ফ্ল্যাটে সংঘটিত ওই খুনের ঘটনায় ১৯৯৮ সালে গ্রেপ্তারের পর ২০০০ সালের ৩১ অক্টোবর বিচারিক আদালতে তার ফাঁসির রায় হয়। সেই থেকে শরীফা ফাঁসির সেলে (কনডেম সেল) বন্দি। ২০০৩ সালের ২২ জুলাই হাইকোর্টে তার এবং সামাদের সাজা বহাল থাকে। এরপর ২১ বছরেও তার আপিল নিষ্পত্তির তথ্য মেলেনি।
কারা কর্মকর্তাদের তথ্য অনুযায়ী, কারা ইতিহাসে আর কোনো নারী আসামিকে এত দীর্ঘ সময় ফাঁসির সেলে থাকতে হয়নি। এতে আরও বলা হয়, ২০১৬ থেকে শরীফা আছেন গাজীপুরের কাশিমপুর কেন্দ্রীয় মহিলা কারাগারের ফাঁসির সেলে। আর্থিক অসংগতি ও মুক্তির সম্ভাবনা নেই মনে করে শরীফার সঙ্গে পরিবারের সদস্যদের যোগাযোগ কমে গেছে।