মানিকগঞ্জের ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে (সদর হাসপাতাল) ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষার পরে টিকিট নেওয়াসহ ডাক্তার দেখাতে চরম ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে রোগীদের। এমন অভিযোগ আউটডোরের রোগীসহ তাদের স্বজনদের। তবে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বলছেন রোগীদের টিকিট অনলাইনের মাধ্যেমে দেওয়া হয়। নেট ধীরগতি থাকায় রোগীদের এই ভোগান্তি। টিকিট নেওয়ার পরে ডাক্তার দেখাতে রোগীদের কোনো ভোগান্তিতে পরতে হচ্ছে না বলেও দাবি করেন।
সোমবার (২৯ জুলাই) এই প্রতিবেদক সরজমিনে গিয়ে দেখতে পায়, হাসপাতালের টিকিট কাউন্টারের সামনে কয়েক শত রোগী টিকিট নেওয়ার জন্য ৪টি লম্বা লাইনে দাঁড়িয়ে রয়েছেন। টিকিট পাওয়ার পরেও ডাক্তারের চেম্বারের সামনে লম্বা লাইন রোগীদের। আবার কয়েকটি চেম্বারে ডাক্তার না থাকলেও সেসব চেম্বারে লম্বা লাইন ধরে অপেক্ষায় রোগীরা।
সদর উপজেলার কৃষ্ণপুর ইউনিয়নের কৃষ্ণপুর গ্রামের মেহের আলির স্ত্রী রাহেলা বেগম (৫০) বলেন, আমার পায়ে ব্যথা, ডাক্তার দেখাতে হাসপাতলে এসেছি সকাল ৯ টায়। এখন বাজে ১২টা। তিন ঘণ্টা লাইনে দাঁড়িয়ে আবার কখনো বসে থেকে অনেক কষ্টের পর টিকিট পেয়েছি।
মানিকগঞ্জের হরিরামপুর উপজেলার চালা ইউনিয়নের উত্তর চানপুর গ্রামের ইউসুফ আলি বলেন, আমার ছেলের বউকে গাইনি ডাক্তার দেখানোর জন্য হাসপাতালে নিয়ে এসেছি। এখানে ৩ ঘণ্টা লাইনে দাঁড়িয়ে টিকিট নিয়ে বেলা ১২টার দিকে ডাক্তারের চেম্বারের সামনে এসে দেখি ডাক্তার নেই। সে জন্য ডাক্তারের আসার অপেক্ষায় তার দরজার সামনে লাইনে দাঁড়িয়ে আছি।
সদর উপজেলার দক্ষিণ সেওতার এলাকার মৃত আবেদ আলির স্ত্রী ওজিফা খানম বলেন, হাসপাতালে আসার পর ৪ ঘণ্টা লাইনে দাঁড়িয়ে থাকার পরে ডাক্তারের চেম্বারে যেতে পেরেছি। ডাক্তার আমার সমস্যার কথা শুনে ওষুধ লেখে দিয়েছেন।
এ বিষয়ে ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক বাহাউদ্দিন বলেন, আমাদের হাসপাতলে প্রতিদিন প্রায় ১ হাজার থেকে ১৫শ আউটডোরের রোগী আসেন। তাদেরকে আমরা অনলাইনে টিকিটের মাধ্যেমে সেবা দিয়ে থাকি। গত কয়েক দিন ধরে নেট ধীরগতি থাকায় আউটডোরের রোগীদের টিকিট দিতে বিলম্ব হচ্ছে। সে জন্য রোগীদের লম্বা লাইন দেখা যাচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, আমাদের হাসপাতাল থেকে কোন রোগী চিকিৎসা সেবা না নিয়ে ফিরে যায় না। অনেক সময় হাসপাতালের ভর্তি রোগী দেখার জন্য এবং অপারেশন থিয়েটারে যান ডাক্তারেরা। সে সময় তাদের চেম্বারে থাকা হয় না। ভর্তি রোগী ও অপারেশন শেষে ডাক্তারেরা আবার চেম্বারে বসে রোগী দেখেন। সে সময় কিছুক্ষণ রোগীদের অপেক্ষায় থাকতে হয়। তবে হাসপাতালে রোগীদের সেবা দেওয়ার জন্য যে পরিমান ডাক্তারসহ জনবলের দরকার তার চেয়ে কম রয়েছে বলেও তিনি জানান।