1
রাষ্ট্রপতি মোহাম্মদ শাহাবুদ্দিন আজ দেশকে এগিয়ে নিতে ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সবাইকে একসঙ্গে কাজ করার আহ্বান জানিয়েছেন।
বঙ্গভবনে দুর্গাপূজা ও বিজয়া দশমী উপলক্ষে হিন্দু সম্প্রদায়ের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময়কালে তিনি বলেন, দেশকে এগিয়ে নিতে ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সবাইকে একসঙ্গে কাজ করতে হবে।
রাষ্ট্রপতি বলেন, “সকল ধর্মের মূল বাণী মানুষের কল্যাণ। আমরা সবাই বাংলাদেশি। সব এখানে পরস্পর সম্পর্কযুক্ত. এখানে সংখ্যাগরিষ্ঠ বা সংখ্যালঘুর কোনো স্থান নেই। সবাই এক এবং একই সত্তার অন্তর্গত।”
তিনি বলেন, দেশ ও জনগণের কল্যাণে ধর্মীয় মূল্যবোধকে কাজে লাগাতে হবে।
তিনি বলেন, বাংলাদেশের সংস্কৃতিতে বিদ্যমান অসাম্প্রদায়িক চেতনা, পারস্পরিক ঐক্য, সৌহার্দ্য ও সম্প্রীতি একটি সুন্দর ভবিষ্যৎ ও আধুনিক দেশ গঠনে কার্যকর ভূমিকা রাখবে।
“মানবতা এখন সারা বিশ্বে যুদ্ধ-বিধ্বস্ত পরিস্থিতিতে উদ্বিগ্ন। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ এবং মধ্যপ্রাচ্যের খবর সমগ্র বৈশ্বিক অর্থনীতির পাশাপাশি বাংলাদেশের অর্থনীতিকে গভীরভাবে প্রভাবিত করেছে। এছাড়া বাংলাদেশের বন্যা কবলিত এলাকার মানুষ অমানবিক জীবন যাপন করছে,” তিনি উল্লেখ করেন।
জনহিতকর কর্মকাণ্ডের মহান ব্রত নিয়ে রাষ্ট্রপতি শাহাবুদ্দিন দেশবাসীকে দেশের অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়ানোর আহ্বান জানান।
তিনি বলেন, পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে বাংলাদেশকে একটি উন্নত, সমৃদ্ধশালী ও বৈষম্যহীন দেশ হিসেবে গড়ে তুলতে পরম সহনশীলতা, পারস্পরিক আস্থা ও সহযোগিতার কোনো বিকল্প নেই।
১৯৭১ সালে রক্তক্ষয়ী মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে বাংলাদেশের স্বাধীনতা অর্জিত হয়েছে উল্লেখ করে রাষ্ট্রপতি বলেন, বাংলাদেশের সব ধর্মের মানুষ তাদের ধর্মীয় অনুষ্ঠান যথাযথ মর্যাদায় ও আনন্দঘন পরিবেশে উদযাপন করবে- এটাই সবার প্রত্যাশা।
হিন্দু সম্প্রদায়ের অন্যতম শ্রেষ্ঠ ধর্মীয় উৎসব দুর্গাপূজা উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি হিন্দু সম্প্রদায়ের জনগণকে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন।
তিনি বলেন, “দুর্গা পূজার সঙ্গে বাঙালির ঐতিহ্য ও সংস্কৃতি মিশে আছে, যা শুধু ধর্মীয় উৎসবই নয়, সামাজিক উৎসবও বটে। সকলের সম্মিলিত অংশগ্রহণ এই উৎসবকে করেছে সার্বজনীন।
বাংলাদেশ একটি সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির দেশ, আমাদের সংস্কৃতির একটি অনন্য বৈশিষ্ট্য উল্লেখ করে রাষ্ট্রপতি বলেন, জাতীয় অগ্রগতি ও সমৃদ্ধি ত্বরান্বিত করতে সমাজে বিদ্যমান সম্প্রীতি ও পারস্পরিক সৌহার্দ্য বজায় রাখতে হবে।
মোহাম্মদ শাহাবুদ্দিন বলেন, এবারের বিজয়া দশমী উদযাপনের অঙ্গীকার হলো পারস্পরিক সহমর্মিতা, সম্প্রীতি ও মানবিক মূল্যবোধের সাথে সঙ্গতি রেখে নতুন প্রজন্মের জন্য একটি প্রগতিশীল ও শান্তিপূর্ণ সমাজ ব্যবস্থা গড়ে তোলা।
পরে রাষ্ট্রপতি দরবার হলে সকল অতিথিদের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় করেন।
রাষ্ট্রপতির স্ত্রী ডঃ রেবেকা সুলতানা, ধর্ম বিষয়ক উপদেষ্টা এএফএম খালিদ হোসেন, প্রাথমিক ও গণশিক্ষা উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. বিধান রঞ্জন রায় পোদ্দার, কূটনৈতিক মিশনের সদস্য, হিন্দু ধর্মীয় গুরু এবং রামকৃষ্ণ মঠের পাশাপাশি রামকৃষ্ণ মিশনের অধ্যক্ষ শ্রীমৎনন্দ মহারাজ, শ্রীমৎ স্বামী মহারাজ প্রমুখ। এতে হিন্দু ধর্মীয় কল্যাণ ট্রাস্টের সেক্রেটারি ডাঃ কৃষ্ণেন্দু কুমার পাল, উপ-পরিচালক প্রশান্ত কুমার বিশ্বাস, বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি বাসুদ্র ধর, সাধারণ সম্পাদক সন্তোষ শর্মা ও মহানগর সার্বজনীন পূজা কমিটির সভাপতি জয়ন্ত কুমার দেব ও সাধারণ সম্পাদক ডাঃ তাপস কুমার পাল অংশ নেন। ইভেন্টে
এসময় রাষ্ট্রপতির কার্যালয়ের সিনিয়র সচিব ড. নাসিমুল গনি, সামরিক সচিব মেজর জেনারেল মোহাম্মদ আদিল চৌধুরী ও প্রেস সচিব মোঃ জয়নাল আবেদীন উপস্থিত ছিলেন।